বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ট্রান্সজেন্ডার নারীকে যৌন নির্যাতন ও হত্যার হুমকি, গ্রেফতার ৩

 

ট্রান্সজেন্ডার তথা রূপান্তরিত নারীকে যৌন নির্যাতন ও হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগে রাজধানী ঢাকার ফার্মগেট ও মহাখালী থেকে মামলার আসামি ইশতিয়াক আমিন ফুয়াদসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।  রোববার (২৩ জানুয়ারি ২০২২) মুঠোফোনের খুদে বার্তায় র‍্যাব তাঁদের গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে। 

এর আগে গত শুক্রবার (২১ জানুয়ারি ২০২২)  যৌন নির্যাতন ও হত্যার হুমকির অভিযোগে এক নারীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে রাজধানীর ভাটারা থানায় মামলা দায়ের করেন ট্রান্সজেন্ডার ওই নারী। 

ট্রান্সজেন্ডার নারী বলেন, ১০ জানুয়ারি বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এক রেস্তোরাঁয় বসে দুপুরের খাবার খাচ্ছিলেন তিনি। তখন মুঠোফোনে এক ব্যক্তি তাঁকে ফোন করেন। তাঁর সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে পরিচয় হয়েছিল। ওই ব্যক্তি দেখা করতে চাইলে তাঁকে রেস্তোরাঁয় আসতে বলেন। পরে রেস্তোরাঁর বাইরে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা হয়। নিজের বাসা কাছেই জানিয়ে ওই ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য তাঁকে বাসায় যাওয়ার অনুরোধ করেন। তারপর তাঁর বাসায় যান তিনি।

অভিযোগে তিনি বলেন, বাসায় গিয়ে রুমে বসার পরই এক নারী ও এক পুরুষ এসে মুঠোফোনে ভিডিও করা শুরু করেন। বিভিন্ন প্রশ্ন করতে থাকেন। তাঁরা আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতে থাকেন। আমার জেন্ডার নিয়ে বাজে মন্তব্য করতে থাকেন। আমি ওই লোকের বাসায় অনৈতিক কাজ করতে গিয়েছি, তা বলতে বলেন। তাঁরা বলতে থাকেন, কথা না শুনলে আমাকে মেরে ফেলবেন। তাঁরা নিজেদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোক বলে দাবি করেন।

তিনি বলেন, এসময় তাঁদের সঙ্গে ওয়াকিটকি ও ওয়্যারলেস ছিল।

ট্রান্সজেন্ডার ওই নারী আরও বলেন, মুঠোফোনসহ বিভিন্ন জিনিস রেখে তাঁকে বাসার বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হয় এবং ওই দুই পুরুষ তাঁকে থানায় নিয়ে যাচ্ছেন বলে গাড়িতে তোলেন। তারপর রামপুরার দিকে গাড়ি থেকে নামিয়ে চলে যান তাঁরা। এরপর এক ট্রাফিক পুলিশের পরামর্শে ভাটারা থানায় যাই ১৩ জানুয়ারি। সেখানে বিভিন্ন তথ্য চায়।

ট্রান্সজেন্ডার নারী বলেন, তারপর বেশ কিছু তথ্য সংগ্রহ করে ১৬ জানুয়ারি থানায় অভিযোগ করি। সেই অভিযোগের তদন্তে সন্তুষ্ট না হলে এবং থানায় মামলা না নিলে র‍্যাব ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সহায়তায় ২১ জানুয়ারি ভাটারা থানায় মামলা করি।

মামলার এজাহার অনুযায়ী, ট্রান্সজেন্ডার নারীর কাছ থেকে আইফোন (১২ প্রো ম্যাক্স), হোয়াইট গোল্ডের চেইন, ডেবিট কার্ড ও এর পাসওয়ার্ড, বিকাশ অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড, ব্যাগে থাকা টাকাসহ প্রায় আড়াই লাখ টাকার সামগ্রী কেড়ে নিয়েছেন ওই চক্রের সদস্যরা।

ট্রান্সজেন্ডার নারী বলেন, আমার একটি পরিচিতি আছে। তারপরও তাঁরা আমার সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করার সাহস পেয়েছেন। তাহলে অন্য ট্রান্সজেন্ডার নারীদের সঙ্গে কেমন আচরণ করতে পারে, তা বুঝতে পারছি।  ঘটনার পর থেকে আমি ট্রমার মধ্যে আছি। আমি চাই অপরাধীরা যথাযথ শাস্তি পাক।

মন্তব্য করুনঃ

মন্তব্য সমূহ (কোন মন্তব্য পাওয়া যায় নি।)

এই শাখা থেকে আরও পড়ুনঃ