বুধবার, ০৮ মে ২০২৪

শ্রীমঙ্গল ভ্রমণ

নিরালা পুঞ্জি - ভ্রমণপিপাসুদের জন্য এক আদর্শ স্থান

 

চায়ের দেশ শ্রীমঙ্গল সব সময়ই ভ্রমণপিপাসুদের জন্য এক আদর্শ স্থান। শ্রীমঙ্গলের সৌন্দর্য নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। তবে দেখার অনেক কিছুই এখনো বাকি আছে হয়তো। যারা মোটরবাইকে ঘুরতে আসেন তারা জায়গাটাকে অগ্রাধিকার দিতে পারেন।

সবুজে মোড়ানো শ্রীমঙ্গলে চা বাগান, আনারস বাগান, রাবার বাগান, লাউয়াছড়া বন, হাওর, মনোরম ঝর্ণা ছাড়াও দেখার মত রয়েছে বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীর বাসস্থান। সাধারণত খাসিয়াদের এসব বাসস্থানকে পুঞ্জি বলা হয়।

এমন একটি পুঞ্জি হচ্ছে নিরালা পুঞ্জি। শ্রীমঙ্গল শহর হতে কালিঘাট রাস্তা ধরে প্রায় ২৫ কিমি দূরে এর অবস্থান (নীলকণ্ঠ চায়ের কেবিনের রাস্তা)। প্রথম ২০ কিমির মত পাকা রাস্তা। এরপরে পাহাড়ি অত্যন্ত উঁচুনিচু, আঁকাবাঁকা ইট বিছানো ও মাটির রাস্তা। শেষের ৪/৫ কিমি যেতে যেতে মনে হবে যেন সাজেকের রাস্তা।

কিছুটা দুর্গম রাস্তা পেড়িয়ে পুঞ্জিতে পৌছালে তাদের সাজানো গোছানো, নীরব বাসস্থানগুলো দেখলে মন ভাল হয়ে যাবে নিশ্চিত।

এছাড়াও যাওয়ার পথে প্রায় ১৮ কিমি দূরে দেখতে পাবেন হরিনছড়া গল্ফ মাঠ। একপাশে রাবার বাগান অন্যপাশে চা বাগান মাঝখানে সুন্দর মাঠ। ছবি তোলার জন্য একটি আদর্শ জায়গা। তবে অনুমতি নিয়ে ঢুকতে হবে।

এর কিছুটা সামনে গেলেই পাবেন খৃষ্টান ধর্মালম্বীদের একটি তীর্থস্থান। অত্যন্ত সুন্দর পরিবেশ। সিড়ি বেয়ে একদম উপরে উঠলে খোলা জায়গা পাবেন। সেখানের ভিউটাও অসাধারন।

ফেরার পথে নীলকন্ঠ কেবিনের সাতরঙা চা অথবা তার পাশেই লকডাইন ষ্টলের হাঁসের মাংস আর চালের রুটি খেয়ে ট্যুরের সমাপ্তি করতে পারেন। পানসি'র কথা আর নাইবা বললাম।

বিঃদ্রঃ পাকা রাস্তা পর্যন্ত গাড়ি বা সিএনজি রিজার্ভ করে যেতে পারবেন। বাকি পথে যেতে হলে জীপগাড়ি বা চান্দের গাড়ী প্রয়োজন হবে। তাই শ্রীমঙ্গল থেকে জীপগাড়ি নিয়ে যেতে হবে। এছাড়া মোটরবাইকে সহজেই যাওয়া যাবে। তবে বর্ষায় মোটরবাইকে যাওয়াটা অত্যন্ত বিপদজনক হবে।

সতর্কতাঃ পুঞ্জিতে গিয়ে কোন ধরনের হইহুল্লোর করা থেকে বিরত থাকবেন। এমনিতে অনুমতি লাগেনা। তবে কারো কাছে অনুমতি নিয়ে নিলেই ভাল হবে। পুঞ্জি বাসীদের ফসল বিশেষ করে পান, লেবু কোনভাবেই ছিড়তে যাবেন না। মহা বিপদে পরতে পারেন।

পুঞ্জির প্রায় প্রতিটা বাসার সামনেই নাড়ীরা কাজ করছিল বা বসে ছিল তাই সেখানের ছবি বা ভিডিও ইচ্ছেকরেই নেয়া হয়নি। ছবি তুলতে চাইলে অবশ্যই অনুমতি নিয়ে নিবেন।

শ্রীমঙ্গল কিভাবে যাবেন তা হয়তো আর নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই। আর থাকার জন্য রয়েছে অনেক হোটেল আর বিভিন্ন মানের রিসোর্ট। তবে হোটেল কিংবা রিসোর্ট আগে থেকে বুকিং করে আসলেই ভাল।

পরিবেশকে ভালবাসুন, পরিবেশকে পরিচ্ছন্ন রাখুন।

লেখক: Escapist Antu

মন্তব্য করুনঃ

মন্তব্য সমূহ (কোন মন্তব্য পাওয়া যায় নি।)