শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

রেকর্ড পরিমাণ চিনি উৎপাদনের সম্ভাবনা দেখছে ভারত

 

চলতি বিপণন মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ চিনি উৎপাদনের সম্ভাবনা দেখছে ভারত। মৌসুম শেষে মোট উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। উৎপাদন বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখছে অনুকূল আবহাওয়া ও ভালো দাম। এছাড়া শীর্ষ চিনি উৎপাদক দেশ ব্রাজিলের পিছিয়ে পড়ার কারণে রফতানিতেও সুবিধা পাচ্ছে ভারত।
সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে ইন্ডিয়ান সুগার মিলস অ্যাসোসিয়েশন (ইসমা) জানায়, ২০২১-২২ মৌসুমের প্রথম তিন মাসেই (অক্টোবর-ডিসেম্বর) ভারতে চিনি উৎপাদন গত মৌসুমের একই সময়ের তুলনায় ৪ দশমিক ৩৪ শতাংশ বেড়েছে। এ সময় উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ১৫ লাখ ৫৫ হাজার টন। আগের মৌসুমের প্রথম তিন মাসে উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ১ কোটি ১০ লাখ ৭৪ হাজার টন।
সংস্থাটির তথ্য বলছে, গত বছরের অক্টোবর-ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ ভারতে ৪৯২টি চিনিকল পণ্যটি উৎপাদন করেছে। আগের বছরের একই সময় ৪৮১টি চিনিকলের কার্যক্রম চালু ছিল। সে হিসাবে সক্রিয় চিনিকলের সংখ্যাও বেড়েছে।
ভারতের রাজ্যগুলোর মধ্যে মহারাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি চিনি উৎপাদন হয়। মৌসুমের প্রথম তিন মাসে এ রাজ্যে ভোগ্যপণ্যটির উৎপাদন ১৫ শতাংশ বেড়েছে। উৎপাদন হয়েছে ৪৫ লাখ ৭৭ হাজার টন। আগের মৌসুমের একই সময় উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৩৯ লাখ ৮৬ হাজার টন। রাজ্যটির চিনিকলগুলো আখ মাড়াই বাড়িয়েছে। নতুন করে ১০টি চিনিকলে মাড়াই শুরু হয়েছে। বর্তমানে ১৮৯টি কল মাড়াই কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
এদিকে উত্তর প্রদেশে চিনি উৎপাদন কিছুটা শ্লথ হয়ে পড়েছে। আগের মৌসুমের প্রথম তিন মাসে এ রাজ্যে ৩৩ লাখ ৬৬ হাজার টন চিনি উৎপাদন হলেও চলতি মৌসুমে তা কমে ৩০ লাখ ৯০ হাজার টনে নেমেছে। গত মৌসুমে ১২০টি চিনিকলের কার্যক্রম চালু থাকলেও চলতি মৌসুমে তা ১১৯টিতে নেমেছে।
কর্ণাটক রাজ্যে উৎপাদন ৬ শতাংশ বেড়েছে। অক্টোবর-ডিসেম্বর পর্যন্ত উৎপাদন হয়েছে ২৫ লাখ ৬৫ হাজার টন চিনি। আগের মৌসুমের একই সময় উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ২৪ লাখ ১৬ হাজার টন।
গুজরাটে উৎপাদন ৪ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে ৩ লাখ ৫০ হাজার টনে পৌঁছেছে। অন্ধ্রপ্রদেশ ও তেলেঙ্গানার সম্মিলিত উৎপাদন বেড়েছে ১৭ শতাংশ। উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫ হাজার টনে। তামিলনাড়ুতে ৯২ হাজার টন চিনি উৎপাদন হয়েছে, যা গত মৌসুমের প্রথম তিন মাসের তুলনায় ২৬ শতাংশ বেশি। ইসমা জানায়, চলতি মাসের শেষে সংস্থাটি আবারো উৎপাদন পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করবে।
সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১-২২ মৌসুমের প্রথম দুই মাসে ভারতের চিনিকলগুলোকে ৪৬ লাখ ৫০ হাজার টন চিনি বিক্রির কোটা বেঁধে দেয় সরকার। কিন্তু প্রতিষ্ঠানগুলো কোটার চেয়ে বেশি চিনি বিক্রি করতে সক্ষম হয়েছে। বিক্রির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৭ লাখ ৫০ হাজার টনে।
প্রান্তিকভিত্তিক বাজার প্রতিবেদনে ইন্টারন্যাশনাল সুগার অ্যাসোসিয়েশন (আইএসও) জানায়, ২০২১-২২ মৌসুমে বিশ্বজুড়ে ১৭ কোটি ৩০ লাখ ৩০ হাজার টন চিনি ব্যবহার হবে। এটি আগস্টে দেয়া পূর্বাভাসের তুলনায় ১৪ লাখ ৪০ হাজার টন কম।
সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ মৌসুমে চিনির বৈশ্বিক উৎপাদন আগের পূর্বাভাসের তুলনায় ১ লাখ ৮৫ হাজার টন কমে ১৭ কোটি ৭ লাখ ৭০ হাজার টনে নামতে পারে। মৌসুম থেকে ভোগ্যপণ্যটির মজুদ কমে ৯ কোটি ৩২ লাখ ৫০ হাজার টনে দাঁড়াবে। গত মৌসুমে মজুদের পরিমাণ ছিল ৯ কোটি ৬৭ লাখ ৪০ হাজার টন।

 

সম্পর্কিত শব্দসমূহঃ

মন্তব্য করুনঃ

মন্তব্য সমূহ (কোন মন্তব্য পাওয়া যায় নি।)

এই শাখা থেকে আরও পড়ুনঃ