বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫

ভারতে বাংলাদেশি ট্যাগ দিয়ে মুসলিম নির্যাতন

ভারতে মুসলমানদের বাংলাদেশি ট্যাগ দিয়ে নির্যাতন করা হচ্ছে বলে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক গণমাধ্যম এনপিআর। ভূ-স্বর্গ কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হাসমার জের ধরে মুসলমানদের উপর এই নির্যাতন চালানো হচ্ছে এবং গণহারে আটক করা হচ্ছে বলে জানানো হয় প্রতিবেদনটিতে।  গত এক সপ্তাহ বাংলাদেশি বলে ১ হাজার ৫০০ জনকে আটক করা হয়েছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত এক সপ্তাহে কম করে হলেও পাঁচজন মুসলমানের বাড়ি বিস্ফোরক দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও যাদের সন্দেহ হচ্ছে তাদেরকেই আটক করছে দেশটির পুলিশ বাহিনী।

গুজরাট পুলিশ জানায়, তারা নিশ্চিতভাবে ৪৫০ জন বাংলাদেশিকে তারা চিহ্নিত করতে পেরেছেন। এছাড়াও বাংলাদেশি নাগরিক বলে সন্দেহ এমন সাড়ে ছয় হাজার মানুষকে তারা আটক করেছে।

বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করে, এমন একটি সংগঠন 'পরিযায়ী শ্রমিক ঐক্য মঞ্চ' গুজরাটের ধরপাকড় শুরু হওয়ার পরে একটি হেল্পলাইন খুলেছে। প্রিয়জনের খোঁজ পাওয়ার জন্য ওই হেল্পলাইনে গত দুদিনে প্রিয়জনের খোঁজ না পাওয়া একশোরও বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে বলে জানাচ্ছিলেন সংগঠনটির রাজ্য সম্পাদক আসিফ ফারুক।

তিনি জানান, গুজরাটে সংখ্যাটা বড়, তাই বিষয়টা ব্যাপক আলোচনায় উঠে এসেছে। কিন্তু উত্তরপ্রদেশ, ওড়িশা আর মহারাষ্ট্রেও পশ্চিমবঙ্গের বাংলাভাষী মুসলমানদের 'বাংলাদেশি' ট্যাগ দিয়ে হেনস্তা করার ঘটনা সম্প্রতি খুব বেড়ে গেছে। এরকম পরিস্থিতি হতে যাচ্ছে এই আশঙ্কা করেই আমরা গত সপ্তাহে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে একটা চিঠিও দিয়েছিলাম। কিন্তু তাতে কাজ যে কিছু হয়নি, দেখাই যাচ্ছে।

'পরিযায়ী শ্রমিক ঐক্য মঞ্চ' বলছে তাদের কাছে অভিযোগ এসেছে, ১৮ই এপ্রিল পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলার ২৩ জন ফেরিওয়ালাকে উত্তরপ্রদেশের কুশিনগরে বাংলাদেশি ট্যাগ লাগিয়ে দেয় ও বাংলাভাষায় কথা বলার জন্য মারধর করে স্থানীয়রা। এরপরে ওই আক্রান্তদেরই পুলিশ তাদের হেফাজতে নেয়, একদিন পরে তারা ছাড়া পান।

আবার ২১শে এপ্রিল মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ থেকে ৬০ জন পরিযায়ী শ্রমিক বাসে করে কর্মক্ষেত্র ওড়িশার কেওনঝড়ের উদ্দেশ্যে রওনা হন। ওড়িশির ময়ূরভঞ্জ জেলার জসিপুরে সকাল বেলায় বাস পৌঁছনোর পর স্থানীয়রা তাদের বাংলাদেশি বলে হেনস্তা ও মারধর করে। তারা মুর্শিদাবাদে ফিরে আসেন।

"ভারতের নাগরিক হিসাবে কী দেশের যে কোনও জায়গায় গিয়ে কাজ করার বা ব্যবসা করার অধিকার নেই বাংলাভাষী আর মুসলমান বলে?" প্রশ্ন রাখেন সংগঠনটির প্রধান আসিফ ফারুক।

 

মন্তব্য করুনঃ

মন্তব্য সমূহ (কোন মন্তব্য পাওয়া যায় নি।)

এই শাখা থেকে আরও পড়ুনঃ