শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

‘দরজার ফাঁক দিয়ে দেখি দুজন আব্বুকে ধরে রেখেছে, সারা শরীরে রক্ত’

 

রাতে মায়ের কাছে দুই ভাই ঘুমিয়ে ছিলাম। রাত ৩টার দিকে আব্বুর চিৎকার শুনে ঘুম ভেঙে যায়। প্রথমে মা উঠে চলে যায়। এরপর উঠে দরজার ফাঁক দিয়ে দেখি সাদা পাঞ্জাবি পরা দুজন আব্বুকে ধরে রেখেছে। সারা শরীর দিয়ে রক্ত ঝরছে। এরপর আব্বুকে ছাদে উঠানোর চেষ্টা করা হয়। তারপর তারা চলে যায়। এরপর শুনি আব্বু মারা গেছেন।

শনিবার সকালে এভাবেই বাবাকে হত্যার ঘটনার বর্ণনা দেয় নিহত রেজাউল ইসলামের ৯ বছরের ছেলে আপন ইসলাম।  

শুক্রবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার দীঘারপাড়া গ্রামে গভীর রাতে ঘরে ঢুকে রেজাউল ইসলাম (৩৫) নামে এক যুবককে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। নিহত রেজাউল ইসলাম উপজেলার দীঘারপাড়া গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে। তিনি পেশায় দিনমজুর। নিহত রেজাউলের আপন ও জীবন নামের দুটি শিশু সন্তান রয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শুক্রবার রাত ৯ টার দিকে গ্রামের একটি দোকান থেকে বাড়ি ফিরে আসে রেজাউল। এরপর রাত সাড়ে ৩টার দিকে চিৎকার শুনে তার বাড়িতে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। এ সময় রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে যশোর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত রেজাউল ইসলামের মা আমেনা খাতুন বলেন, আমার সোনার কোনো শত্রু ছিল না। কেন তাকে হত্যা করা হলো। কাজ ছাড়া সে কিছু বুঝতো না। আমার সোনা কি আর ফিরে আসবে? বলতে বলতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন তিনি।

নিহতের ভাই আনোয়ার হোসেন জানান, রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে ঘুমিয়ে ছিলেন। এরপর রাত সাড়ে ৩টার দিকে চিৎকার শুনে ছুটে এসে দেখি রেজাউলের গলা দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। তার গলায় ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। এরপর তাকে উদ্ধার করে যশোর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

প্রতিবেশী ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম জানান, রেজাউল কোনো রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। মাঠে কাজ করা ছাড়া সে কিছু বুঝতো না। কিন্তু তাকে কেন হত্যা করা হলো সেটা তিনি বুঝে উঠতে পারছেন না।

কালীগঞ্জ থানার ওসি মুহা. মাহফুজুর রহমান মিয়া জানান, দিনমজুর রেজাউলকে হত্যার কারণ জানা যায়নি। তবে তদন্তের পর হত্যার কারণ জানা যাবে। পুলিশ হত্যার কারণ খুঁজে বের করতে কাজ শুরু করেছে।

মন্তব্য করুনঃ

মন্তব্য সমূহ (কোন মন্তব্য পাওয়া যায় নি।)

এই শাখা থেকে আরও পড়ুনঃ