অনুমোদন পেলো স্টারলিংকের লাইসেন্স

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস মার্কিন স্যাটেলাইট সেবা প্রদানকারী স্টারলিংকের লাইসেন্স অনুমোদন করেছেন। তিনি এই লাইসেন্সটি সোমবার অনুমোদন করেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ২৫ মার্চ ‘নন-জিওস্টেশনারি অরবিট (এনজিএসও) স্যাটেলাইট সার্ভিস অপারেটর ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি লাইসেন্সিং গাইডলাইন প্রকাশ করে। ওই গাইডলাইন অনুসারে, স্টারলিংক সার্ভিসেস বাংলাদেশ নন-জিওস্টেশনারি অরবিট (এনজিএসও) স্যাটেলাইট সার্ভিস অপারেটর লাইসেন্স পাওয়ার জন্য প্রযোজ্য ফি এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ বিটিআরসি বরাবর আবেদন করেছিল। প্রতিষ্ঠানটির অনুকূলে আবেদনকৃত লাইসেন্স ইস্যুর জন্য গত ২১ এপ্রিল অনুষ্ঠিত ২৯৪তম কমিশন সভায় নীতিগত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
স্টারলিংক বাংলাদেশের ইন্টারনেট সেবা ব্যবস্থায় একটি নতুন সংযোজন। শ্রীলংকার পর, দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশে এই বৈশ্বিক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময়, যেখানে শেখ হাসিনা সরকারের উপর্যুপরি ইন্টারনেট বন্ধের প্রতিবাদে স্টারলিংককে বাংলাদেশে আনা একটা গণদাবিতে পরিণত হয়েছিল, প্রধান উপদেষ্টা তার উদ্যোগে এই সেবাটি বাংলাদেশে নিয়ে আসেন।
তিনি আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশকে বিনিয়োগবান্ধব একটি দেশ হিসেবে তুলে ধরা এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন দুর্গম এলাকায় যেমন হাওর, বাঁওড়, দ্বীপাঞ্চল এবং উপকূলীয় দুর্যোগপ্রবণ এলাকাগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন ও মানসম্পন্ন ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেওয়া। এসব এলাকায় ফাইবার নেটওয়ার্ক পৌঁছানোর জন্য যে চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তার সমাধান হিসেবে স্টারলিংক বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করবে।
ফয়েজ তৈয়্যব বলেন, স্টারলিংকের সেবাগুলোর মধ্যে একটি বিশেষ সুবিধা হলো নিরবচ্ছিন্ন উচ্চগতির ইন্টারনেট। বিদ্যুৎ চলে গেলেও এই সেবা বন্ধ হবে না, যা আইএসপির ক্ষেত্রে সাধারণত হয়ে থাকে। লোডশেডিং বা মোবাইল টাওয়ারের ব্যাটারির ব্যাকআপ ফুরিয়ে গেলে মোবাইল ইন্টারনেটেও সমস্যা দেখা দেয়, কিন্তু স্টারলিংকের ক্ষেত্রে এমন সমস্যা হবে না।
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশে ফাইবার নেটওয়ার্কের বিস্তৃতি এখনও সীমিত এবং ফাইবার নেটওয়ার্কের বেশিরভাগ অংশ টেলকো গ্রেড নয়। বেশিরভাগ টেলিযোগাযোগ টাওয়ার এখনও ফাইবার সংযোগের বাইরে, এবং সেখানে মাইক্রোওয়েভ দিয়ে সেবা দেওয়া হয়। এই সমস্যা স্টারলিংক সমাধান করবে।
ফয়েজ তৈয়্যব জানান, স্টারলিংক বাংলাদেশের মোবাইল এবং ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বাজারে প্রতিযোগিতা বাড়াবে এবং ইন্টারনেট সেবা প্রদান ব্যবস্থায় এক নতুন রূপান্তরের সূচনা করবে। এতে করে শহর কিংবা গ্রাম, সবার জন্য উচ্চগতির এবং নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবার নিশ্চয়তা তৈরি হবে।
মন্তব্য করুনঃ
মন্তব্য সমূহ (কোন মন্তব্য পাওয়া যায় নি।)