মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪

যারা স্বাধীনতার পর জম্ম নিয়েছেন, তাদের ভাবনা- সুমাইয়া শীলা

 

তখন আমি  / আপনি,যুবক,যুবতী থাকলে  কি করতাম/ করতেন? 

ছোটোবেলায়, একসময় ভাবতাম, ইস্! আমি যদি একাত্তরে যুবক / যুবতী  থাকতাম। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে শহীদ বা বিজয়ী হতাম। দেশের জন্য যুদ্ধ করে গর্বিত হওয়ার সেই সুযোগটা পেলাম না। এই আক্ষেপ, অনেকেরই আছে, ছিলো; থাকারই কথা।

এই পৃথিবীতে মানুষের সব আশা পূরণ হবে না, হয় না; সম্ভবও না। তাই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের সুযোগও সবার হয় না। এটি একটি রাষ্ট্রে সাধারণত একবারই আসে।
যারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী; তাদের অনেকেই স্বাধীন দেশে এখন বেঁচে নেই।

যারা বেঁচে আছেন, তারাও জীবন সায়াহ্ণে।  একটি গাছ লাগানোর সময় কিছু লোক থাকবে, পরে আরও অনেকে আসবে। গাছটি রোপণের সময় যারা থাকেন, তাদের সবাই ওই গাছের ফল ভোগ করতে পারেন না, একসাথেও ভোগ করতে পারে না। এটা পৃথিবীর আবর্তনের মতোই সত্য।

 
বিভিন্ন সময়ে ওই গাছের ছায়াভোগী, ফলভোগী ও উপকারভোগী; গাছটির প্রতি সবারই কিছু দায়িত্ব থাকে। যারা গাছটি লাগিয়েছে, তারা তাদের দায়িত্ব পালন করে গেছেন। পরবর্তীতে যারা এসেছে বা আসবে, তাদেরও তো দায়িত্ব আছে। 

ওই গাছটিকে আগাছামুক্ত রেখে, দৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড় করানো, প্রতিষ্ঠিত রাখা। শাখা-প্রশাখায় তাকে বিস্তৃত করা, তার ফুল, ফল ও কাঠের সুনাম চারদিকে ছড়িয়ে দেওয়া।


যারা গাছ লাগানোর সময় ছিলো না, কিন্তু পরে এসে গাছটিকে লাগানো অবস্থায় পেলো; তারা যদি সঠিকভাবে গাছের পরিচর্যা না করে, তাতে গাছটি নানা প্রতীকূলতায় হুমকির মুখে পড়তে পারে। এরপর আবার তারা যদি আক্ষেপ করে যে, আমি গাছ লাগানোর সময় উপস্থিত থাকলে, এই করতাম, সেই করতাম; তা কিন্তু বড়োই হাস্যকর হবে। কে যে কি করতো, সেটা কিন্তু এখনও বোঝা যায়।  

মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা অর্জন বা বিজয় এক বছরেই হয়েছে, তাই মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা এবং বিজয়ের বয়সও সমান, মানে ৫০ বছর। একটি দেশের জন্য সংখ্যাটি বা সময়টি একেবারে কম না কিন্তু। ৫০ বছরে একটি গাছ চূড়ান্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে যায়। একজন মানুষ শারীরিক সক্ষমতা ও ম্যাচিউরিটির চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছে যায়। একটি দেশও কিন্তু সেরকমই হওয়ার কথা। কোনো দেশে যদি তা না হয়; সে ক্ষেত্রে দুর্নীতি, আইনের শাসনের অভাব, দেশপ্রেমের ঘাটতি, উপযুক্ত নেতৃত্বের অভাব এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক রাজনীতি বা ষড়যন্ত্রসহ কিছু কারণ দায়ী থাকবে।  

কথা হলো, এরা তো সবাই গাছ লাগানোর পরে এসেছে। তাদের আমলে এসব কারণ ঘটবে কেন? তারা ঘটতে দেবে কেন? দিচ্ছে কেন? দেয় কেন?

বয়স ও অন্যান্য কারণে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে না পারা লোকেরা; স্বাধীনতার পর দেশ গঠনে কি এমন ভূমিকা রাখতে পারে না, যাতে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে না পারার আক্ষেপ ঘুচে যায়। স্বাধীনতার পর দেশ গঠনে যারা সঠিক ভূমিকা রাখছে না, একাত্তরে বেঁচে থাকলে, তারা কি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতো?

সম্পর্কিত শব্দসমূহঃ

মন্তব্য করুনঃ

মন্তব্য সমূহ ( ১ টি মন্তব্য পাওয়া গেছে )

  • Dr. Md. Golam Mostafa
    Dec 19, 2021 — 12:50 AM

    তথ্যটিতে কিছু রেফারেন্স সহ মুক্তিযুদ্ধের শহীদের দেশপ্রেমের আত্ম লব্ধ কিছু কম্কান্ড উদাহরণ স্বরুপ উপস্থাপন করলে চমৎকার লেখা হতো

এই শাখা থেকে আরও পড়ুনঃ

বিজয় দিবস ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সৌদি প্রবাসী মোহাম্মদ সেলিম মিয়ার বাণী

বিজয় দিবস ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সৌদি প্রবাসী মোহাম্মদ সেলিম মিয়ার বাণী

আতিকুল ইসলামঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী ‘মুজিববর্ষ’, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও মহান বিজয় দিবসের বাণীতে মোহাম্মদ সেলিম মিয়া সৌদি প্রবাসী বলেনঃ ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক অনন্য গৌরবময় দিন। দীর্ঘ নয় মাসের সশস্ত্র সংগ্রাম এবং শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের কাক্ষিত স্বাধীনতা। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও মহান বিজয় দিবস এবার ত্রিমাত্রিক রূপ লাভ করেছে। এই আনন্দঘন মুহুর্তে আমি দেশবাসীকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন। মহাকালে